জীবনের উদেশ্য খুঁজে বেড়াই! পার্ট ১
কখনো খেয়াল করেছেন?
কোনো গ্রূপ ছবি দেখলেই সবার আগে চোখ কাকে খোঁজে বেড়ায়? – নিজের ছবিকে…
কেউ বকা দিলে মন সবার আগে কোন প্রশ্নটি করে? – আমাকেই কেন সবাই বকাবকি করে?
কোনো অঘটন ঘটলে মস্তিক কোন বিষয়টি তুলে ধরে? -আমার সাথেই কেন সব সময় এমনটি হয়?
আমি, আমি, শুধু আমি, আর আমি
আমার ব্যথা, আমার শান্তি, আমার দুঃখ, আমার চাওয়া!
এই আমি আমি করতে করতে জীবনটা কেমন জানি আত্ম কেন্দ্রিক ও এক ঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে
তাই প্রশ্ন করছি
জীবনের উদ্দেশ্য কি শুধু আমিতেই সীমিত? আমার উদ্দেশ কি শধুই আমি?
আমারতো মনে হয়, আমাদের এই অস্তিত্বের কারণ আমাদের পরিবার, ক্যারিয়ার অথবা এডভেঞ্চার ছাপিয়ে আরো মহৎ কিছুর জন্য
আমরা কেন এই পৃথিবীতে এসেছি? কি উদেশ্য নিয়ে এসেছি?
এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে গাদা গাদা সেলফ হেল্প, ফিলোসফি, স্পিরিচুয়ালিটির বই এর পাতা শেষ করেছি
সব শেষে যেটা মনে হলো
প্রশ্ন গুলো কঠিন, অবচেতন মন তাই এই কঠিন প্রশ্ন শুনতে পছন্দ করে না, তাইতো আমরা সস্তা এনেরটাইনমেন্ট বুদ্ হয়ে থাকি
আর যারা সাহস করে এগিয়ে যাচ্ছে তারাও কেমন যেন এক ভুল পথে হাটছে,
ফিলোসোফাররা নিজেস্ব মতবাদ দিচ্ছেন এবং তাও সবই ধারণা ভিত্তিক, তাদেরও শুরু- ওই “আমি” থেকেই
আমি কি হতে চাই?
আমার জীবনের গোল কি?
স্বপ্ন দেখো
কিছু গোল সেট করো
বের করো তুমি কিসে ভালো
ডিসিপ্লিন হয়
মূল্য বোধ ঠিক করো
নিজের উপর বিশ্বাস রাখো
কখন হার মেন না
উপদেশ গুলো নিঃস্বন্দেহে ভালো, আমার নিজেরও বেশ কাজে এসেছে, দুনিয়ার ম্যাপ কাঠিতে হয়তো অনেকের চোখে সফলও হয়েছি
তবে, একটু ভেবে দেখুন,
জীবনের সফলতা আর জীবনের উদ্দেশ্য কিন্তু এক নাও হতে পারে
যত দিন উদ্দেশ পূর্ণ না হবে তোতদিন বাই ডিফল্ট একটা শূন্যতা গ্রাস করে রাখবে আর সেটা ভরাট করার জন্য মন সব সময় অস্থির হয়ে থাকবে। তাই সাধারণ সেলফ হেল্প বই থেকে আরো ডিপ কোনো প্রেসক্রিপশন দরকার!
একটি পার্টিকুলার টুল এর বেবহার জানতে হলে আমরা যেমন মেনুফেকচারার কে জিজ্ঞেস করতে হয়, তেমনি আমাদের বেবহার কি সেটা জানতে হলে আমাদের মেনুফেকচারার এর মেনুয়ালে ঘেটে দেখতে হবে.
স্রষ্টাই আমাদের এই পৃথিবীতে নিয়ে এসেছেন অতএব তিনিই জানবেন কি উদ্দেশে আমরা এসেছি।
মনের অস্থিরতার ওষুধ ও তিনি বাতলে দিয়েছেন
“বিশ্বাসীদের জন্য স্রষ্টার জিকিরই (তার প্রতি মগ্নতা, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, তাকে ঘিরে গভীর চিন্তা) একমাত্র অন্তরে প্রশান্তি এনে দিতে পারে [কুরআন ১৩:২৮]
তাই জীবনের উদ্দেশ্য কি সেটা জানতে হলে কোনো পপ সাইকোলজিস্ট বা সেলফ হেল্প গুরু কাছে নয় স্বয়ং মেনুফেকচারারের কাছেই যেতে হবে. কোনো বৈশিক উইজডম নয় দরকার ডাইরেক্ট স্বর্গীয় হস্তক্ষেপ
স্বর্গীয় মেনুয়ালে তিনি বলেছেন
“আমাদেরকে এক মাত্র তার সার্ভিস এর উদ্দেশেই সৃষ্টি করা হয়েছে” [কোরান ৫১:৫৬]
সেই সার্ভিস গুলো কি হতে পারে? বা তার কোয়ালিটি অফ সার্ভিসই বা কি হবে সেটাও তিনি বাতলে দিয়েছন
হ্যা তার প্রশংসা করা, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা তো আছেই, তা ছাড়াও, সার্ভিস এর উদহারণ হতে পারে,
তিনি অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া,
তার খিদে লাগলে মুখে খাবার তুলে দেয়া,
পিপাসা লাগলে পানি এগিয়ে দেয়া,
ঋণ থাকলে ঋণের বোঝা হালকা করে দেয়া
প্রশ্ন জাগে না? আরে স্রষ্টার আবার এসবের প্রয়োজন হয় নাকি?
ইনটারেস্তিংলি এক্সাক্টলি এই প্রশ্ন গুলোই কিন্তু তিনি হাশরে করবেন?
“আমি অসুস্থ ছিলাম, তুমি দেখতে এলে না কেন?
আমি ক্ষুদার্থ ছিলাম, তুমি খাইয়ে দিলে না কেন?
আমি পিপাসু ছিলাম, পিয়ে দিলে না কেন?
উত্তরও তিনিই দিয়েছেন,
অমুকে অসুস্থ ছিল? তাকে দেখতে গেলেই আমাকে দেখা হয়ে যেত
অমুকে তোমার কাছে খানা চেয়েছিলো, তাকে খাওয়ালেই আমাকে খাওয়ানো হতো
অমুকে তোমার কাছে পানি চেয়েছিলো, তাকে পান করলেই আমাকে পান করানো হতো! [সহি মুসলিম ২৫৬৯]
আমার বরাবরই মনে হয় আমরা একেকজন একেকটি টুল, আমাদেরকে কিছু স্পেসিফিক উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে এবং
বিভিন্ন সময়ে তিনি আমাদেরকে ব্যাবহার করিয়ে নিবেন।কাজ হবেই! আমরা না এগিয়ে আসলে হয়তো তিনি অন্য কাউকে দিয়ে কাজটা করিয়ে নিবেন [কুরআন ৪৭:৩৮] ।
যদি আমরা কাজে আসতে পারি তাহলে আমাদের সার্থকতা আর যদি না পারি সেটা আমাদের ব্যর্থতা।
মদ্য কথা,
অন্যের সেবাই তাঁর সেবা এবং তার সেবার স্ট্যান্ডার্ড এর এক্সক্যাম্পলও তিনি সেট করে দিয়েছেন। আমাদের রাসূলুল্লাহ!
আমাকে মানো, আমার রাসূলকে মানো [কোরান ২৪:৫৪ এবং ৪:৫৯]
নিয়শ্চই তোমাদের জন্য তোমাদের রাসূলের মদ্ধে একটি উত্তম এক্সাম্পল দেয়া আছে [৩৩:২১]
অর্থাৎ মেনুফেক্চারার মেনুয়েলে বলে দিয়েছেন,
“ইন্সট্রাকশন ফল করো এবং ট্রেইনারকেও ফলো করো”
শেষ কথা:
চারিদিকে এতো অস্থিরতা, এতো অন্যায়, এতো অবিচার! প্রশ্ন জাগে না? মরে গেলেই কি সব শেষ?
নাহ! হতে পারে না!
ইকুয়েশন কোনোভাবেই মিলে না, স্রষ্টা ছাড়া কোনো পেরামিটারই এই ইকুয়েশনে ফিট হচ্ছে না
সব কিছু চান্সের উপর ছেড়ে দেয়া যায় না,
তাই আমি কোন ধরণের টুল এবং কিভাবে নিজেকে স্রষ্টার সেবায় লাগাতি পারি? এই প্রশ্নের উত্তর খুজার জন্য জার্নি স্টার্ট করলাম।
প্রতি দিনই এই বিষয়ে কিছু আঁকাআঁকি করছি। সবই একান্ত বেক্তিগত মতামত, ভালো লাগলে গ্রহণ করবেন, না লাগলে এড়িয়ে যাবেন শুধু শুধু অযথা বাকদণ্ডে জড়াবেন না.
কারণ একজন ভালো টুল কখনো বাক দ্বন্দে জড়াতে পারে না
Leave a Comment