রিজিক নিয়ে চিন্তা করবো কি করবো না?

এক দিকে ইন্সট্রাকশন
রিজিক নিয়ে চিন্তা করো না [1]
আর অপরদিকে দিকে ইন্সট্রাকশন
কোম্পিত হয়ে চিৎকার না করা পর্যন্ত সাহায্য আসেনি ! [2]
আমার মনে হয় আমরা এই ডায়লেমাতেই কনফ্লিক্টেড
চিন্তা করব নাকি চিন্তা করবো না?
নিশ্চিন্তে থাকবো নাকি ব্যাকুল হয়ে চিৎকার করবো?
আসলে এখানে বেলেন্সের একটা বিষয় আছে
নীরবে ব্যাকুল হয়ে ডাকতে হবে
আর সাহায্য যে আসবে এতে দুশ্চিন্তাও করা যাবে না
এখন চিন্তা আসতেই পারে যে
কই? যারা চিৎকার করছে না
তারা তো দিব্বি রিজিক পেয়ে যাচ্ছে
তাহলে কি আমরা কোনো ভুল করছি?
আমার মনে হয়
এই জায়গাতে রিজিক নিয়ে থার্ড ইন্সট্রাকশনটিটি ভুলে যাই
আর তা হলো
“যদি আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের রিযিক প্রশস্ত করে দিতেন
তবে তারা যমিনে অবশ্যই সীমালঙ্ঘন করত
তিনি তাঁর ইচ্ছেমতো পরিমাণেই নাজিল করে থাকেন
নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক অবহিত ও সর্বদ্ৰষ্টা।” [3]
অর্থাৎ আপনাকে যিনি বানিয়েছেন তিনি জানেন যে
আপনাকে যদি এই মুহূর্তে টেনশন মুক্ত রিজিক দেয়া হয়
আপনার পা পিছলে যাবার সম্ভাবনা প্রবল
অর্থাৎ আপনি কোনো না কোনো নাফরমানিতে জড়িয়ে যাবেনই
অর্থাৎ তিনি আপনার ভিতরকার অবস্থা জানেন
হয়তো বিষয়টা আপনি নিজেও উপলব্ধি করছেন
কারণ এমন কত বার হয়েছে যে
যখনি লাইফের একটা ফেইসে ভালো সময় এসেছে
আপনি সাথে সাথে একটু এদিক ওদিক চলে গিয়েছিলেন?
আবার যখন বিপদ এসেছে
ঠিকই তখন এস্তেগফার করতে করতে লাইনে এসেছেন?
এমন কত বার হয়েছে যে
সিউর ডিল ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছে
জাস্ট বিকস ওই সপ্তাহে আপনি নিজের উপর অত্যধিক জুলুম করেছিলেন?
অর্থাৎ
আমাদের কর্ম আর রিজিক একই সুতোয় বাধা
হা সেই প্রশ্নটা আবারো ফিরে আসতেই পারে যে
কই? কত শত খারাপ মানুষ কত শত খারাপ কাজ করে বেড়াচ্ছে
তাদের তো এরকম কোনো পেরেশানিই পোহাতে হচ্ছে না
আমার ক্ষেত্রেই কেন এমনটা হচ্ছে?
আসলে এটা পলিসিগত ব্যাপার
একটা হচ্ছে গুড বয় পলিসি
আরেকটা হচ্ছে বেড বয় পলিসি
উপরের কথা বার্তা গুলো গুড বয় এর জন্য বর্তায়
বেড বয় পলিসি হলো
“আল্লাহ ছাড় দিয়ে রেখেছেন
যেদিন ধরবে সেদিন খবর আছে” [4]
এবং আমলের উপর ডিপেন্ড করবে দুনিয়াতেই ধরবে
নাকি পরের জন্য উঠায় রাখবে
আপনার যদি এই মুহূর্তে খারাপ টাইম পার করছেন
তাহলে খুশি থাকেন
কারণ আপনি ভাগ্যবান
আপনি এখনো গুড বয় পলিসির আওতায় অন্তর্ভুক্ত
আপনি এখনো যদি না বুঝতে পারেন
কেন আপনার রিজিক কমে যাচ্ছে
কেনই বা আপনাকে পথে ঘাটে জলিল হতে হচ্ছে
তাহলে তাড়াতাড়ি পুরানো আমল গুলোর কথা মনে করে মাফ চাইতে থাকেন
জেনুইনলি মাফ
পসিবল হলে চোখের পানি ফেলে প্রমিস করেন যে
এই কাজ জীবনেও করবেন না
এই প্রমিসটাই কিন্তু তওবা
তওবার এই বিষয়টি একটা হাদিসে সুন্দর ভাবে কেপচার্ড হয়
“এক সাহাবা এসে জিজ্ঞেস করেন
ইয়া রাসূলুল্লাহ,
নাজাতের রেসিপি কি?
উত্তরে তিনি তাকে তিনটি এডভাইস করেন:
জিব্বাকে সংযত রাখো
নিজের ঘরকে নিজের জন্য এনাফ করো আর
নিজের আমল গুলোর কথা মনে করে চোখের পানি ফেলতে থাকো” [5]
আরেকটা রেসিপি হলো
চোখের পানির পাশাপাশি বেশি বেশি কালিমা পড়া
কারণ আমরা যখন গুনাহতে থাকি
তখন আমরা মুসলিম অবস্থায় থাকি না [6]
নতুন করে ইসলামে প্রবেশ করতে হয়
আর নতুন মুসলিম মানেই ক্লিন স্লেট
তবে খেয়াল রাখবেন
এটা কোনো লাইফ হেক না
তাই কেউ এটাকে আবার অ্যাবিউজ করতে জয়েন না
কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত এবিউস না করছেন
ততক্ষন পর্যন্ত ভালো মন্দের বিচার করার ক্ষমতা অক্ষুন্ন থাকবে [7]
এবিউস করলে একটা পর্যায়ে হৃদয় শক্ত হতে থাকবে
তখন খারাপ আমল করলেও খারাপ ফিল হবে না
অর্থাৎ আস্তে আস্তে বেড বয় পলিসিতে পরে যাবেন
তাঁর রহমত আপনার উপর থাকলে
শেষ দিকে এসে বড় একটা ধাক্কা খাবেন
আর যদি না খান
তাহলে একমাত্র আল্লাহই জানে
আপনার কপালে কি দশা আছে
তবে মনে রাখবেন
মানুষ মাত্রই ভুল করবে
কারণ ভুল করাটা ফিত্রতে আছে
তবে ভুল হয়ে গেলে হতাশ হওয়া যাবে না
কারণ আমাদের রব গাফ্ফার
যিনি একবার না বার বার ক্ষমা করতে ভালোবাসেন [8]
রিজিকের আরেকটি ইন্টারেষ্টিং এস্পেক্ট হলো
“প্রফুল্ল থাকা”
সেলফ হেল্প জোনারে সবাই একই কথা বলে
রিজিক এট্ট্রাক্ট করতে হলে ভিতরটা প্রফুল্ল থাকতে হবে
অর্থাৎ এমন কিছু করা যাবেন না যাতে ভিতরটি ডিস্টার্বড থাকে
খেয়াল করে দেখুন
যখনি কোনো ভুল হয়ে যায়
ভিতরটি অস্থির লাগা স্টার্ট করে
আর যদি বেড়েই যায়
এস্তেগফার করে নিচের রেসিপিটা ফলো করতে পারেন
রেমেডি আল্লাহ বলে দিয়েছেন
মনের প্রফুল্লতা আসে আল্লাহর জিকিরে আর বেস্ট জিকির হলো কুরআন
আলেমগণ এই ইন্সট্রাকশন থেকে একটি পরীক্ষিত রেসিপি তৈরি করেন
রেসিপিটা হলো ইখলাসের আমল
দৈনিক ৩০০ বার ইখলাস পড়া
যদি কখনো পড়তে পারেন
দেখবেন ভিতরের অস্থিরতা টনিকের মতো নেমে যাচ্ছে
কেমন যেন ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে
বিষয়টা এমন না যে
২৯৯ কিংবা ৩০১ বার পড়লেও রেসিপি কাজ করবে না
আইডিয়াটা হলো
একটা লম্বা সময় ধরে কুরআনের একটি শক্তিশালী সূরা পড়া যাতে মনটা শান্ত হয়ে যায়
আর মন শান্ত থাকলে নিজেকে ওয়ার্দী মনে হয়
মনে মনে ভাল কিছু আশার আলো জাগে
আর ভালো কিছুর আশাটা এক ধরণের শক্তশালী দুয়া
এবং একারণেই এ আমলটা করলে দেখবেন
আপনি খুব সহজে রিজিক এট্ট্রাক্ট করতে সক্ষম হচ্ছেন
বিষয়টাতে আমার ক্ষেত্রে অনেক বার প্রমাণিত
তবে এতো কিছু করার পরেও যদি দেখেন
রিজিকের পেরেশানিতে যাচ্ছে না
কিছুতেই কিছু হচ্ছে না
এর অর্থ হলো
হয় আপনি হয় ভুল জায়গায় পরে আছেন
নয়তো
তিনি জান্নাতে আপনার পজিশন নিয়ে হেপি না
তিনি চাচ্ছেন জান্নাতে আপনি যেন আরেকটু ভালো অবস্থানে থাকেন! [9]
এখন আপনাকে হয় জায়গা চেঞ্জ করতে হবে
নয়তো
জান্নাতে গিয়ে কি কি করবেন সেটার প্লেন করা স্টার্ট করতে হবে
ইদার ওয়ে,
দুআ রইলো যেন
আল্লাহ আপনাকে এবং আমাকে দুনিয়াতে এবং আখিরাতে দুখানেই যেন সহজ রিজিক প্রদান করেন
আমিন!
Share: