হজরত ইউসুফ এবং “ইমহোটেপ”

২০১৫ তে প্রথম মিশর যাত্রা
দেখা মিলেছিল স্বপ্নের পিরামিডের
ছবিতে যতটানা বোঝা যায়
সামনাসামনি দেখতে সেটা আরো অনেক মন্ত্রমুগ্ধকর
তখন থেকেই মাথায় প্রশ্ন
কে বানালো এই বিশাল স্টেচার?
কেনই বা তাঁকে বানানো হলো?
অনেক থিওরিই পেয়েছি
তবে সব থেকে কনভিন্সিং থিওরি বোধহয়
হাইড্রোলিক পাম্প থিওরি
জি পিরামিড হোল একটি ইন্টেলিজেন্ট হাইড্রোলিক পাম্প
যা নীল নদ থেকে পানি উঠিয়ে সেটা ডিস্ট্রিবিউট করত [১]
ইনফেক্ট এটা আর এখন থিওরি নয়
এর একটা ওয়ারকেবল মডেল পর্যন্ত বানানো হয়েছে
যাই হক গিযার এই পিরামিড কোন পারপাসে তৈরি হয়েছিল সেটা বুঝতে হলে
জানতে হবে আরেকটি গল্প
যেতে হবে ১০ মাইল দূরে
আরেকটা পিরামিডে
“দা স্টেপ পিরামিডে”
৪৫০০ বছর প্রাচীন এই পিরামিডই হোল প্রথম পিরামিড
পিরামিডটি নির্মাণ হয় রাজা জোসার আমলে
এবং এর প্রধান কারিগর ছিলেন রাজার সেকন্ড মেন্
“ইমহোটেপ”
এই ইমহোটেপ ছিলেন একই হারে
একজন চিকিৎসক
একজন গাণিতিক
একজন এস্ট্রোলোজিস্ট
একজন আর্কিটেক্ট এবং
একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি
রাজা জোসার একদিন এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেন [২]
দেখেন, ৭ বছর ধরে তার এলাকায় ভয়ানক এক দুর্ভিক্ষ হবে
পড়লেন ভিশন চিন্তায়
শরণাপন্ন হলেন ইমহোটেপের
ইমহোটেপ বানালেন পিরামিড আর পাশে ফুড রেসারভয়ার
সেই রেসারভয়ারটি আজো আছে [৩]
ঘটনাটি কি করে যেন হজরত ইউসুফের ঘটনার সাথে মিলে যায়
তাই না?
আরও বলি
বাংলায় “খাজানা” শব্দটি আসে আরবি থেকে
কুরআনে এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়
যেমন
“এমন কোন জিনিসই নেই যার খাজানা আমার কাছে নেই
কিন্তু আমি সেগুলো আমার জ্ঞান মোতাবেক নির্দিষ্ট পরিমাণে সরবরাহ করে থাকি।
আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরণ করি,
অতঃপর আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং
তা তোমাদেরকে পান করতে দিই” (১৫:২১-২২)
খেয়াল করুন এখানে পানিকে খাজানা বুঝানো হচ্ছে
আবার সুরা ইউসুফে,
ইউসুফ আঃ বললেন:
‘আমাকে খাজানা দায়িত্ব দিন,
নিশ্চয় আমি তাঁর যথাযথ হেফাযতকারী এবং সুবিজ্ঞ’। (১২:৫৫)
মরুভূমিতে সব থেকে বড় খাজানা কি?
আমরা সবাই জানি- “পানি”
মন বলছে হজরত ইউসুফই হলেন সেই ইমহোটেপ
যিনি দুর্ভিক্ষ থেকে বাচার জন্য পানি শঞ্ছালনের ব্যবস্থাপনায় পিরামিড বানিয়েছিলেন এবং
শস্য সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন গুদাম পিরামিডের পাশেই
ইমহোটেপই হজরত ইউসুফ কিনা ১০০% বলা যায় না
কারণ এর বিপরীত থিওরিও আছে
তবে তিনি যে ভিলেন ছিলেন না এটা প্রায় নিশ্চিত
অথচ হলিউডে কিন্তু তাঁকে ভিলেন রূপেই পেশ করে
জি বলছি “দা মামী” এন্ড “দা মামী রিটার্নস” এর কথা
সেখানে যেই ভিলেনকে দেখান হয়েছে
তিনি আর কেউ নন
ছিলেন “ইমহোটেপ”
যাই হোক
হলিউড বিকৃত করবে এটাই স্বাভাবিক
আজকের লিখা ইমহোটেপ কে নিয়ে নয়
কুরআন নিয়ে
লিখা জারা ফলো করেন জানেন হয়ত
ঘুরে ফিরে লিখা গুল এই কুরআনে গিয়েই ঠেকে
কুরআনে পিরামিড ওঁ মিশর কে কেন্দ্র করে তিনটি ডিটেলস ইদানীং বেশ ভাবাচ্ছিল
তাই শেয়ার করলাম
প্রথম ডিটেল :
আমরা জানি কুরআনে যখন মুসা আঃ এর ঘটনা বর্ণনা হয়
তখন মিশরের রাজাকে ফিরাউন বলা হয়
তবে যখন ইউসুফ আঃ এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়
তখন কিন্তু এই মিশরের রাজাকে ফিরাউন নয়
নরমাল রাজা হিসেবেই সম্বোধন করা হয় [৪]
আমরা এখন জানি যে
“মিশরের প্রথম দিকের রাজারা ফারাও হিসাবে পরিচিত ছিলেন না
সেরফ রাজা হিসাবে পরিচিত ছিলেন।
‘ফারাও’ একটি সম্মানজনক উপাধিটি
এটি ১৫৭০-১০৬৯ বিসি তে গিয়ে পরিচিত পায়” [৫]
অবাক লাগে ভেবে
কুরআন এই লেভেলের একুরেসি
বজায় রাখল কি করে?
দ্বিতীয় ডিটেলস :
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভূতাত্ত্বিকরা মনে করতেন যে
মিশরীয় পিরামিডগুলি চুনাপাথর ব্লক দিয়ে তৈরি
শ্রমিকরা সেই ব্লকগুলিকে পিরামিডের উপরে অতিমানবীয় ভাবে তুলেছিল
কেউ কেউ তো তাই এটাকে এলিয়েন দেড় কারসাজি বলে চালিয়ে দেন
তবে কিছুদিন পূর্বে ড্রেক্সেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মিশেল বারসুম এবং তাঁর সহকর্মীরা
ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ এনালাইসি দাড়া এই ধারণায় চুন কালি কুলুপ দেন
তারা দেখান
গিজার গ্রেট পিরামিড চুনাপাথর ব্লক নয়
তৈরি হয়েছিল পাকা মাটির ইট দাড়া [৬]
ইন্টারেস্টিংলি কুরআন কিন্তু একি কথা বলে
“ফিরাউন তাঁর চীফ আর্কিটেক বলে”
“ওহে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও
এবং আমার জন্য একটি উঁচু টাওয়ার নির্মাণ কর” [৭]
বিষয়টি অবাক লাগে এই ভেবে যে
কুরআন কি করে জানল যে
প্রাচীন মিশরিওরা পুরানো ইট দারাই দালান নির্মাণ করত?
তৃতীয় ডিটেল :
হায়ারোগ্লিফিকস লিখা ডিসাইফার হয় ১৮০০ শতাব্দীর শেষে
তখন জানা যায় যে
ফেরাউদের চীফ আর্কিটেক দের টাইটেল ছিল হামাম!
অবাক হয়ে তাই আবার ভাবি
কুরআন কি করে কেপচার করলো যে
ফিরাউন “হামামকেই” টাওয়ার বানাতে বলেছিলো?
কুরআন যে কোনো মানুষের লিখা হতে পারে না
কত দিক থেকেই না প্রতিনিয়ত প্রমাণিত হচ্ছে!
Share: