রিজিক নিয়ে বেশ পেরেশানিতে ছিলাম
কিছুদিন পূর্বে রিজিক নিয়ে বেশ পেরেশানিতে ছিলাম
আর শয়তান তো এই সুযোগই খুঁজে
অদ্ভুত সব ডাউট ঢুকাচ্ছিলো
সো নামাজে একটু পরিবর্তন আনি
মুখস্থ সূরা গুলো বাদ দিয়ে কিছু সিলেক্টেড আয়াত পড়া স্টার্ট করি
বিশেষ করে সেই আয়াত গুলো যেখানে বলা হচ্ছে
“ইজ্জতের মালিক আল্লাহ
বেইজ্জতের মালিকও আল্লাহ
তিনিই যাকে ইচ্ছে তা বেহিসাব বাড়িয়ে দেন
যেখানে বলা হচ্ছে
“তিনিই রিজিকের মালিক আর তিনি
রিজিকও যাকে ইচ্ছে বেহিসাব বাড়িয়ে দেন” [১]
এই পন্থায় মাইন্ডসেটে একটা অদ্ভুত শিফট ফিল করি
আসলে দিনের পর দিন,
পাঁচ বার করে এই ইনফো যখন আপনি কনসিয়াসলি আওড়াতে থাকবেন
আপনার মাইন্ডে এটা টনিকের মতো কাজ করে
কাজ করতে থাকে অটো সাজেশনের মতো
সাব কনসাসলি আপনি তখন টিউনড হতে থাকেন যে
আমার রবই আমার রিজিকের ব্যবস্থা করবেন
এতো চিন্তার কিছু নেই
এর মানে এই নয় যে টেনশন একদম থেমে যাবে
টেনশনে থাকবে, তবে ভয়ে সিটকে থাকা ফিলিংসটা চলে যাবে
সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটা ড্রাইভ আসবে
একটা হোপ আসবে
আর কিছুটা টেনশন থাকা তো ভালো
এতে এবাদতেও গভীরতা আসে
আমরা যারা মক্তবে পড়িনি
বাসায় উস্তাদ রেখে পড়েছি
যাদের কেবল আমপারার শেষের কয়টা সূরাই সম্বল
তাদের কে বলছি
সম্ভব হলে শুধু শেষের কয়েকটা সীমিত সূরায় আবদ্ধ না থেকে পরিধিটা একটু বাড়ান
যদি ভাবেন
“না! আমি বুড়ো হয়ে গিয়েছি
এখন আর মাথায় ঢুকবে না, মাথা মোটা হয়ে গিয়েছে”
তাহলে বলি
এই মোটা মাথায় মোটা মোটা লিরিক্স কি করে ঢুকে তাহলে?
সো এক্সকিউজ বাদ দিয়ে
বেছে বেছে এডভাইস রিলেটেড কিছু আয়াত মুখস্থ করে ফেলুন
আর শুধু জেনারেল মুখস্থ না
ওয়ার্ড বই ওয়ার্ড বুঝে মুখস্থ
নাহলে ঠিক মত কানেক্ট করতে পারবেন না
আর কানেক্ট করতে না পারলে বেনিফিটও পাবেন না
তখন শুধু তোতা পাখির মতোই মুখস্থ আওড়ে যাবেন
হৃদয়ে নিতে পারবেন না
সাইকোলোজিকালি স্পিকিং,
আমরা যখন কোনো জিনিস মুখস্থ আওড়াতে থাকি
প্রায় সময়ই তা ফিল করি না
সেটা যত চেনা কবিতাই হোক না কেন
ছোট্ট একটা উদহারণ দেই
আমরা সবাই মোর ওর লেস এই ছড়াটি জানি
“টুইংকেল টুইংকেল লিটিল স্টার্”
এক নিঃশ্বাসে ছড়াটি একবার পরে ফেলুন!
গুড,
এবার আস্তে আস্তে এই ছড়াটাই ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড ধীরে ধীরে পড়ুন
কি, কোনো ডিফারেন্স পাচ্ছেন?
খেয়াল করে দেখুন
বহু পরিচিত এই কবিতাটাই যেন পেলো এক ভিন্ন গভীরতা
সে যেন আমাদের ইমাজিনেশনকে স্পর্শ করছে এখন
এই টেকনিক নামাজে নিয়ে আসুন
আয়াতের মধ্যখানে ১ সেকেন্ড পস দিয়ে দিয়ে পড়ুন
পড়তে পড়তে তার ওয়ার্ডিংস গুলো খেয়াল করার চেষ্টা করুন
দেখবেন নামাজের সুইটনেস বেড়ে যাচ্ছে
মনে রাখবেন,
নামাজ হলো মুসলিমের সফলতার টুল
তাইতো মুয়াজ্জেন প্রতি বেলায় ঘোষণা দেন
“হাইয়া আলাল ফালাহ” ;
“হাইয়া আলাল ফালাহ”
অর্থাৎ
“সফলতার দিকে আসো” ;
“সফলতার দিকে আসো”
আমরাতো এর মিনিংও পাল্টে ফেলেছি
এখন আর সফলতার কথা বলি না
বলি
“কল্যাণের দিকে আসো” ;
“কল্যাণের দিকে আসো”
অনেকে আর্গু করতে পারেন যে
নামাজে তো যাচ্ছি ঠিকই
তাহলে সফলতা আসছে না কেন
অথবা ভাবতে পারেন
অমুকে তো নামাজ পড়ছে
তবে তার বিহেভিওর চেঞ্জ হচ্ছে না কেন?
কারণ ঐ এক
কথা গুলো হৃদয়ে পৌঁছাচ্ছে না
যেটা একটা এক্সপেরিয়েন্স এক্সারসাইজ হওয়ার কথা ছিল
সেটাকে আমরা একটা মুখস্থ বিদ্যার এক্সারসাসি বানিয়ে ফেলেছি।
সময় এসেছে নামাজকে এফেকটিভ বানানোর
এমন ভাবে আয়াত গুলো পড়ুন যেন আপনি শিফট হতে বাধ্য
বেছে বেছে এডভাইস রিলেটেড আয়াত গুলো বের করুন
সেগুলো মুখস্থ করে ফেলুন
ওয়ার্ড বই ওয়ার্ড
আর সেটা নামাজে ইন্স্টল্ করুন
আর যখন পড়বেন আবারো বলি
হর হর করে নয়,
ধীরে ধীরে ১ সেকেন্ড পস দিয়ে দিয়ে পড়ুন
আপনি শিফট অনুভব করতে বাধ্য
কিভাবে?
লেটস সে আপনি নামাজে সেই আয়াতটি মুখস্থ করলেন যেখানে বলা হচ্ছে
“আমার রব সাধ্যের বাহিরে কাউকে কিছু চাপিয়ে দেন না” [২]
এই আয়াতটি যখন আপনি বার বার আওড়াবেন
প্রেসারড টাইমে তখন আপনার মোরাল এমনিতেই বুস্ট থাকবে
যখন প্রতি দিন পড়বেন
“রহমানের বান্দা তারাই যারা যমীনে নম্রভাবে চলাফেরা করে ” [৩]
তখন আপনি কিভাবে এরোগেন্ট থাকবেন
আপনি যখন প্রতি দিন পড়বেন
“তোমরা অন্যের ব্যাপারে এসাম্পশন করা থেকে বিরত থাক”
“তোমরা অন্যের দোষ খোঁজাখুঁজি করা থেকে বিরত থাক”
“এমনকি একে অন্যের অনুপস্থিতিতে দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা থেকে বিরত থাক” [৪]
তখন আপনি কি করে কলিগদের নিয়ে গসিপে লিপ্ত হবেন?
যখন প্রতিদিন পড়বেন
“অশ্লীলতার ধারে কাছেও যেও না” [৫]
তখন অটোমেটিক দেখবেন রাতের আঁধারে মোবাইল স্ক্রীন থেকে চোখ আপনা আপনি সরে যাচ্ছে
যখন প্রতিদিন পড়বেন
মোমিন তো তারা যারা
“আমানত রক্ষা করে আর
কথা দিয়ে কথা ভেঙে ফেলে না” [৬]
তখন আপনি চাইলেও অন্যের টাকা মেরে দিতে পারবেন না
অথবা
“এইতো ভাই ৫ মিনিট!”
বলে উধাও হয়ে যেতে পারবেন না.
যখন প্রতি দিন পড়বেন
“শয়তান তোমাদের গরিব হওয়ার ভয় দেখায় আর
আল্লাহ তোমাদের ফজলের প্রমিস দেয়”
তখন কি করে আপনি অর্থ সংকট নিয়ে হতাশ হবেন!
কাৰণ এ কথা এমন একটা কিতাব ক্লেইম করছে যেখানে
“কোনো সন্দেহ নেই! [৭]
আর যখন পড়বেন
“বি জাস্ট, তা যদি নিজের আত্মীয়র বিরুদ্ধেও হয় তবুও” [৮]
তখন আপনি কি করে স্বজনপ্রীতি দেখবেন?
যখন বুঝে পড়বেন
“বাবা মা উপর উফ পর্যন্ত করা যাবে না” [৯]
তখন গলার স্বর অটোমেটিক দেখবেন নেমে যাচ্ছে
যখন পড়বেন
“কোনো নারীকে অপবাদ দেয়া যাবে না” [১০]
তখন কি আর কাউকে মজার ছলে লেবেল দিতে পারবেন না
আসলে কুরআন একটা মোরাল কম্পাস
এগুলোকে জীবনে নিয়ে আসাটা জরুরি
যারা মসজিদ কমিটিতে আছেন সম্ভব হলে
ইমাম সাহেব দেড় অনুরোধ করবেন তারা যেন
মাগরিবে এই ছোট আয়াত গুলো তালিম করেন
এবং এই আয়াত গুলোই ব্যবহার করেন
কারণ মাগরিবের জামাতে অনেক মানুষ সমাগম হয়
এতে অনেক মানুষ কভার করা যাবে!
আর আপনারা যারা
বাসায় ওস্তাদ রেখে বাচ্চাদের দীন শিক্ষা দিচ্ছেন
তাদেরও বলে রাখি
ওস্তাদ কে অবশ্যই অবশ্যই এই আয়াত গুলো ওয়ার্ড বই ওয়ার্ড মুখস্থ করিয়ে দিতে বলবেন
দিতে পারলে বোনাসও প্রদানের ঘোষণাও দিতে পারেন !
আসলে নীতি কথা গুলো আমরা সবাই জানি
খালি সময় আসলে ভুলে যাই
তাইতো কোরান এই ফেনোমেনাকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে এড্রেস করেছে
বেশি বেশি মনে করিয়ে দিতে বলেছে
বলেছে
“বেশি বেশি মনে করাতে থাকো
নিশ্চই এতে মুমিনদের কল্যাণ আছে” [১১]
লিখাটা আসলে নিজেকে মনে করিয়ে দেয়াই মুখ্য!
কারো কাজে আসলে আলহামদুলিল্লাহ!
Leave a Comment